সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগের এ ঘোষণা দিলেন তিনি। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আবে বলেন, আমি চাই না দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আমার শারীরিক সমস্যা কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াক। নিজের মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। ২০১২ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বছরে জাপানের ইতিহাসে দীর্ঘ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকার রেকর্ড গড়েন শিনজো আবে। এর আগেও ২০০৭ সালে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে আচমকা তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। গত কয়েক বছর ধরে আবে ‘আলসারেটিভ কোলাইটিস’ রোগে ভুগছেন। গত জুলাইয়ের শুরুতে তার রক্তবমি হয়েছিল। তার পর থেকে তিনি নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহে তাকে দুবার হাসপাতালে যেতে হয়। গত সোমবার ৬৫ বছর বয়সী লিবারেল ডেমোক্রাটিক পার্টির এ নেতা আবারও স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং বর্তমান মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আবের বর্তমান প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। আবের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জাপানের জনগণের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেওয়ায় তা দূর করতে মন্ত্রী পরিষদের মুখ্য সচিব ইয়াশিহিদে সুগা সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি এখন সুস্থ আছেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তত রয়েছে, চিকিৎসায় তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। আবে ১৯৯৩ সালে প্রথমবারের মতো এলডিপির টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কোবে স্টিল কোম্পানির এক সময়ের কর্মকর্তা আবে ২০০৬ সালে দলীয় সভাপতির দায়িত্ব পান এবং সে বছর কয়েক মাসের জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় ৫২ বছরের আবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের সবচেয়ে তরুণ প্রধানমন্ত্রী হন। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জন্ম নেওয়া জাপানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এক বছর পর স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আবের দল জয়ী হয়ার পর আবারও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। দুই বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ‘আবেনোমিক্স’ বা ‘আবেতত্ত্ব’ দেশটির অর্থনীতিকে আরও বেশি চাঙ্গা করবে বলে ফের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসেন। তার পর উত্তর কোরিয়ার ক্রমাগত আগ্রাসী ভাব, দেশের অর্থনৈতিতে ধস, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট নিয়ে জনগণের অসন্তোষে আবের জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী হয়ে পড়লে ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী আবে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দেন এবং আবারও বিপুল ভোটে জয়লাভ করে ক্ষমতায় ফেরেন।